আয়াতুল কুরসীঃ মুসলমানদের জন্য এর গুরুত্ব ও ফযিলত!

0 1,450

আয়াতুল কুরসী (আরবি: آية الكرسي‎‎) হচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয়গ্রন্থ কোরআন শরীফের দ্বিতীয় সুরা আল বাকারার ২৫৫তম আয়াত। এটি কোরআন শরীফের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ আয়াত এবং ইসলামিক বিশ্বে ব্যাপকভাবে পঠিত ও মুখস্থ করা হয়। এতে সমগ্র মহাবিশ্বের উপর আল্লাহর জোরালো ক্ষমতা ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলমানগণ বিশ্বাস করে যে এটি পাঠ করলে অসংখ্য পূণ্য লাভ হয়।

আয়াতুল কুরসী:

اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা-হুয়াল হাইয়্যুল কাইইয়্যুম। লা তা’খজুহু সিনাতুন ওয়া লা নাওম। লাহু মা ফিসসামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্ব। মাং জাল্লাজি ইয়াশফাউ ইংদাহু ইল্লা বি-ইজনিহী। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়া মা খালফাহুম। ওয়া লা ইউহিতুনাহু বিশাই-ইম মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ। ওয়াসিআ কুরসিয়্যুহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্ব। ওয়া লা ইয়া-উ-দুহু হিফজুহুমা, ওয়া হুয়াল আলিইয়্যুল আজিম।

অর্থ: আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং জমিনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ত্ব করতে পারে না। তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসি আসমানসমূহ ও জমিন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দুটোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান।

আয়াতুল কুরসীর ফযিলতঃ নিম্নে হাদীস শরীফ থেকে আয়াতুল কুরসির ফযিলত দেয়া হলো—

জান্নাতের দরজাঃ-

عن أبي أمامة قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم من قرأ آية الكرسي في دبر كل صلاة مكتوبة لم يمنعه من دخول الجنة الا ان يموت

অর্থ: হযরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না।
[সুনানে নাসায়ী আল কুবরা, হাদীস নং ৯৯২৮]

عن علي بن أبي طالب رضي الله عنه يقول سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم على أعواد المنبر يقول : من قرأ آية الكرسي دبر كل صلاة لم يمنعه من دخول الجنة إلا الموت و من قرأ حين يأخذ مضجعة أمنه الله على داره و دار جاره و دويرات حوله

অর্থ: হযরত আলী (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মিম্বারের উপর বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাত প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশীর ঘরে এবং আশপাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন।
[শুআবুল ঈমান, হাদীস নং ২৩৯৫]

মর্যাদাসম্পন্ন মহান আয়াত: আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ রা. রাসূল সা.-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল সা. ! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল সা. বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী। [নাসায়ী]

উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কাছে কুরআন মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল্ হাইয়্যূল কাইয়্যূম) তারপর রাসূলুল্লাহ্ নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেন: আবুল মুনযির! এই ইলমের
কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। [সহীহ মুসলিম]

শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচার আয়াত: হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, সূরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে, যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হবে সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। [মুসতাদরাকে হাকিম]

জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা.) নবী (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল (সা.) বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী। [নাসায়ি]

উবাই বিন কাব থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) উবাই বিন কা‘বকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন: তোমার কাছে কুরআন মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন: (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল্‌ হাইয়্যূল কাইয়্যূম) তারপর রাসূলুল্লাহ্ নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেন: আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ”।
[সহীহ মুসলিম ১৭৫৫]

শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচার আয়াতঃ

হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত: রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরা বাকারায় একটি (আয়াতুল কুরসী) শ্রেষ্ঠ আয়াত রয়েছে। যে ঘরে এই আয়াত পাঠ করা হয় সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। [মুসতাদরাকে হাকিম:২১০৩]

আল্লাহতালা আমাদেরকে নিয়মিতভাবে এই আমলটি করার তওফিক দান করুক। আমিন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.