পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা!

0 1,673

★কোরআনের আলোকে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব 🕊

পবিত্র কোরআনে জ্ঞান চর্চার ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এ সম্পর্কে  মহান আল্লাহর কিছু বাণী উল্লেখ করা হল: 

اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ 
১. ‘পাঠ কর, তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ [সূরা আলাক : আয়াত ১]

وَقُلْ رَّبِّ زِدْنِىْ عِلْمًا 
২. ‘বলো: হে প্রভু! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন।’ [সূরা তোয়াহা : আয়াত ১১৪]

فَأَسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ 
৩. ‘যদি তোমরা না জানো, তবে জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস করে জেনে নাও।’ [সূরা আন নহল : আয়াত ৪৩]
 
يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ 
৪. ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদের সুউচ্চ মর্যাদা দান করবেন। [সূরা  মুজাদালা : আয়াত ১১]

هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ 
৫. ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা উভয় কি সমান হতে পারে?’ [সূরা জুমার : আয়াত ৯]

وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ 
৬. ‘যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই তার অনুসরণ কর না ।’ [সূরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৩৬]

فَاذْكُرُوا اللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُمْ 
৭. ‘আল্লাহকে সেভাবে স্মরণ করো, যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন।’ [সূরা আল বাকারা: আয়াত ২৩৯]

يُؤْتِي الْحِكْمَةَ مَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ 
৮. “আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিকমত (বিশেষ জ্ঞান) দান করেন এবং যাকে (আল্লাহর পক্ষ হতে) হিকমত দান করা হয়েছে, নিঃসন্দেহে তাকে প্রভূত কল্যাণ দেওয়া হয়েছে।” [সূরা বাকারা: আয়াত ২৬৯] 

كَمَا أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولًا مِنْكُمْ يَتْلُو عَلَيْكُمْ آيَاتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُمْ مَا لَمْ تَكُونُوا تَعْلَمُونَ
৯. হে মুসলমানগণ! যেমন আমি তোমাদের মাঝে তোমাদের মধ্য হতে একজন রসূল প্রেরণ করেছি, সে তোমাদেরকে আমার আয়াত পড়ে শোনায়, তোমাদের পরিশুদ্ধ করে এবং তোমাদের আল কোরআন ও প্রজ্ঞা শিক্ষা দেয়; তোমাদের আরো (কিছু) শিক্ষা দেয় যা তোমরা কখনই জানতে না সেগুলো।’ [সূরা আল বাকারা: আয়াত ১৫১]

★ হাদিসের আলোকে জ্ঞানার্জনের গুরুত্বঃ

জ্ঞানার্জন সম্পর্কে রসূলুল্লাহও (সা.) বিশেষভাবে তাগিদ করেছেন। তিনি বলেছেন:

১. ‘আল্লাহ যখন তার কোন বান্দার কল্যাণ করতে ইচ্ছা পোষণ, তাকে তিনি ধর্মিয় বিষয়ে পান্ডিত্য দান করেন।’ [আল কাফি, ১ম খণ্ড, পৃ-৩২]

২. ‘সোনা-রূপার খনির মতো মানুষও (বিভিন্ন প্রকারের) খনি। তাদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে উত্তম (গুণ বৈশিষ্ট্যধারী) হয়ে থাকে, দীনের সঠিক বুঝ-জ্ঞান লাভ করতে পারলে ইসলাম গ্রহণের পরও তারাই উত্তম মানুষ হয়ে থাকে।’ [সহীহ মুসলিম: আবু হুরাইরা রা.]

৩. ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা জ্ঞানী ও বিজ্ঞানীদের হারানো ধন। সুতরাং যেখানেই তা পাওয়া যাবে, প্রাপকই তার অধিকারী। [তিরমিযি]

৪.‘ইসলামের একজন সঠিক জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তি শয়তানের জন্যে হাজারো (অজ্ঞ) ইবাদতগুজারের চাইতে ভয়ংকর।’! [তিরমিযি]

৫. ‘জ্ঞানান্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলিমের একটি অবশ্য কর্তব্য ।’ [আল কাফি, ১ম খণ্ড, পৃ-৩৮]

৬. ‘দ্বীনের জ্ঞানী ব্যক্তি কতইনা উত্তম মানুষ, তার কাছে লোকেরা এলে তিনি তাদের উপকৃত করেন, আর না এলে তিনি কারো মুখাপেক্ষী হন না।’ [রিযযীন, মিশকাত]

৭. ‘জ্ঞানের আধিক্য (নফল) ইবাদতের আধিক্যের চাইতে উত্তম।” [বায়হাকি: আয়েশা রা. থেকে]

৮. ‘সর্বোত্তম মানুষ হলো তারা, জ্ঞানীদের মধ্যে যারা উত্তম।’ [দারমি]

৯. ইমাম বাকের (রহঃ)থেকে বর্ণিত হয়েছে: জ্ঞানের যাকাত হল অন্যকে জ্ঞান শিক্ষা দেয়া।

আল্লাহতালা আমাদের সকলকে দ্বীন ও বিজ্ঞানের জ্ঞান অর্জনের তওফিক দান করুক। আমিন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.