বাবরি মসজিদ রক্ষায় সুপ্রিমকোর্টের রায় ইস্যুতে আপিলে যাচ্ছেন মুসলিমরা!

0 452

ভারতের বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির নিয়ে করা মামলার রায় এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে বাবরি মসজিদের বিরোধপূর্ণ জমি রামজন্মভূমি ট্রাস্টকে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সেক্ষেত্রে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে আলাদা বিকল্প কোনো জমি বরাদ্দের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণা করা হয়। যেখানে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজির। খবর ‘এনডিটিভির’।

এ দিকে বিতর্কিত এই মামলাটির রায় ঘোষণার পর বিষয়টিকে ‘অন্যায্য’ বলে অভিহিত করেছেন মুসলিমরা। যার অংশ হিসেবে রবিবার (১০ নভেম্বর) দেশটির কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষ থেকে ইস্যুটিতে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন মুসলিমদের আইনজীবী জাফারিয়াব জিলানি।

তার ভাষায়, ‘আমরা মনে করছি এটা সম্পূর্ণই অন্যায্য। তাই কেউই এই রায় মানতে পারছে না। আমরা রায়ের সব অংশের সমালোচনা করছি না।’

জিলানি বলেন, ‘সমস্ত জমি অন্য পক্ষকে দেওয়া ঠিক নয়। আমরা শীর্ষ আদালতকে সব সময়ই সম্মান জানাই। তবে এই রায়ের সঙ্গে আমাদের সহমত না হওয়ার অধিকার রয়েছে। শীর্ষ আদালতে অনেক মামলার রায়ই বদলে গেছে। তাই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর অধিকার আমাদের আছে, আর আমরা তা করব।’

এর আগে শনিবার সকালে রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মুসলিম পক্ষের আইনজীবী জিলানি বলেছিলেন, ‘আমরা আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। কেবল একটি মসজিদের জন্য নয়। আজ যদি আমরা আত্মসমর্পণ করি, সেক্ষেত্রে দেশে কোনো মসজিদই নিরাপদে থাকবে না।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আজকের রায়ে আমরা অসন্তুষ্ট। পরবর্তী করণীয় নিয়ে আমরা আলোচনা করব। আমরা পুরো রায় পড়ব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের একটি যৌথ বেঞ্চ অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি সম্পন্ন করেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সে সময় আর রায় ঘোষণা করা হয়নি।

যদিও তখন থেকেই গুঞ্জন উঠছিল আগামী ১৭ নভেম্বর অবসরে যেতে পারেন রঞ্জন গগৈ। যে কারণে এর আগেই যেকোনো দিন ঐতিহাসিক এই মামলাটির রায় হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল। মূলত এসব বিষয় বিবেচনা করেই অতি স্পর্শকাতর মামলার রায় ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে প্রশাসন।

অপর দিকে গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে প্রধান বিচারপতি গগৈ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এমনকি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গেও তার বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত সেই বৈঠকেই গগৈ অন্য বিচারকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তিনি অযোধ্যা মামলায় রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.