ইরান-সৌদি উত্তেজনার পেছনে ইসরাইলের হাত; রহস্য ফাঁস করলেন ইমরান খান!

0 367

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক নষ্টের পেছনে প্রধানত দায়ী দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইল। তিনি বলেন, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে ইসরাইল যাতে এ অঞ্চলে তেলআবিবের স্বার্থ রক্ষা করা যায়। ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামাবাদের চেষ্টার কথা উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন তেহরান-রিয়াদ সম্পর্ক এ অঞ্চলের সব দেশের জন্যই কল্যাণকর।

পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টিতে এমন সময় ইসরাইলের হাত থাকার কথা উল্লেখ করলেন যখন এ দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সম্প্রতি তেহরান সফরে এসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। একই উদ্দেশ্যে তিনি সৌদি আরব সফরে গিয়ে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন।


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইমরান খাানের বৈঠক!

তেহরান-রিয়াদ উত্তেজনা নিরসনের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছেন। ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে গোলযোগ সৃষ্টির পেছনে ইসরাইলের হাত থাকার ব্যাপারে ইমরান খানের বক্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। ইমরান খান বুঝতে পেরেছেন, ইসরাইলের বাধা ও ষড়যন্ত্রের কারণেই বছরের পর বছর ধরে ইরান ও সৌদি আরবের মতো ভ্রাতৃপ্রতিম দুই মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধ লেগেই আছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরব দেশগুলো অভ্যন্তরীণ নানা সংকটে জর্জরিত হয়ে পড়েছে এবং ওই দেশগুলো ইসলামি ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিচ্ছে।

সৌদি রাজা সালমানের সঙ্গে ইমরান খানের বৈঠক!

ইহুদিবাদী ইসরাইল মনে করে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যতবেশী গোলযোগ ও অসন্তোষ বজায় থাকবে ততবেশী ইসরাইলের নিরাপত্তা সুরক্ষিত থাকবে। এ কারণে তারা নানা উপায়ে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ বাধানোর চেষ্টা করছে যাতে তারা নিজেরা ঝগড়া ঝাটিতে ব্যস্ত থাকে এবং ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের দিকে কেউ তাকানোর সময় না পায়। তাই আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর উচিত ইসরাইলের এ ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা।

আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানানোয় এ দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এ কারণে দশকের পর দশক ধরে ইসরাইল কোণঠাসা হয়ে আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবসহ আরো কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিন সংকটকে উপেক্ষা করে দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এবং গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পর ইসরাইলের কর্মকর্তারা ইরানভীতি ছড়ানোর মাধ্যমে ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক নষ্ট করে।

ইসরাইল মনে করে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যতবেশী অনৈক্য বিরাজ করবে ততবেশী তার নিরাপত্তা ঠিক থাকবে। এ কারণে ইসরাইল এ পর্যন্ত প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে। তবে কয়েকটি দেশ ইসরাইলের এ ফাঁদ পা দিলেও তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় ইসরাইলের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

উল্লেখ্য যে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা নিরসনের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা এবং সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন তথা পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের উদ্দেশ্য পাক প্রধানমন্ত্রী ইরান, সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি দেশে সফর করবেন বলে জানিয়েছে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারই ধারাবাহিকতায় ইরান থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে সৌদি আরব সফর করেছিলেন ইমরান খান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.