মাথায় হিজাব/স্কার্ফ ছাড়া ছবি বা ভিডিও স্যোসাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে ১ থেকে ১০ বছরের জেল!

0 825

নারীদের পোশাকের ব্যাপারে কঠোর রক্ষণশীল দেশ ইরান। আজ থেকে ঠিক ৪০ বছর আগে ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লব দেশটিতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছিল সেদেশের মেয়েদের জীবন ও পোশাকের ক্ষেত্রে।

দেশটির আইন ও সামাজিক বিধি-নিষেধের মধ্য দিয়ে নারীরা চলাচল করে। তবে কর্মক্ষেত্র, রাস্তাঘাট, শপিংমল, পার্কসহ নারীদের স্বাধীন ও অবাধ চলাচল আপনাকে মুগ্ধ করবে। কিন্তু ধর্মীয় ও সরকারী নীতিবিরোধী নারীদের উপর নতুন এক আইন জারি করা হয়েছে। মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব ছাড়া স্যোসাল মিডিয়ায় ছবি বা ভিডিও পোস্ট করলে তাকে ১ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত জেল খাটতে হবে। খবর বিবিসি ও ইনডিপেন্ডেন্ট।

ইসলামী নীতি বা ইরান বিরোধী মার্কিন এক্টিভিস্ট ‘মাসিহ আলিনেজাদ’ এর ওয়েব সাইটে হিজাব ছাড়া ছবি পোস্ট করলেও তাকে শাস্তির আওতায়  আনা হবে। ২০১৪ সালে চালু হওয়া ‘হোয়াইট ওয়েনসডে’ নামে ওই সাইটে ‘ইরানে হিজাব আইন বাধ্যতামূলক’এর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। এটিকে সমর্থন জানিয়ে অনেক ইরানি নারী তাদের হিজাব ছাড়া ছবি সেখানে শেয়ার করে।

তবে পাল্টা প্রতিবাদ হিসেবে ইরানের ধর্মপ্রাণ নারীরা হিজাবের পক্ষে প্রতিবছর প্রচারণা মিছিল করে থাকে। এ মিছিলে হাজার হাজার নারী অংশগ্রহণ করে থাকে।

ইরানের রাস্তায় হিজাবের পক্ষে স্লোগানরত হাজার হাজার নারীর শোভাযাত্রা

তেহরানের বিপ্লবি আদালত প্রধানের উদ্বৃতি দিয়ে একটি নিউজ এজেন্সি জানায়, যারা আইন অমান্য করে ওই সাইটে ছবি বা ভিডিও শেয়ার করবে তাদের ১ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে। ইরানে সকল নারীকে মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। কেউ এই আইন অমান্য করলে তাকে দুই মাসের কারাভোগ বা ২০ ডলার জরিমানার আইন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হওয়ার পর নারীদের প্রকাশ্যে চলাফেরার ক্ষেত্রে হিজাব বা  স্কার্ফ পোশাক পরিধান করা বাধ্যতামূলক করা হয়। এ নিয়ম ভাঙার কারণে বহু নারীকে জেল-জরিমানারও শিকার হতে হয়েছে। এর বিরুদ্ধে স্যোসাল মিডিয়ায় ২০১২ সালে প্রথম থেকে প্রতিবাদ দানা বাঁধতে থাকে। গত বছর এক নারীকে হিজাব আইন ভঙ্গ করায় ২ বছরের জেল খাটতে হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ইসলামি আন্দোলনের পূর্বে তৎকালীন শাহ রেজা পাহলভি শাষন আমলে হিজাব বা বোরকা পরা ইরানে সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। কেউ হিজাব বা বোরকা পরে বাইরে আসলে আমেরিকা-ইউরোপের নিয়ন্ত্রিত সরকারের পুলিশ তাদের হিজাব খুলে ফেলত। তখন কেউ হিজাব বা বোরকা পরতে চাইলে সরকারকে ভ্যাট দিতে হতো যা সবার পক্ষে সম্ভব ছিল না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.