ভারত শুধু আমাদের থেকে নেয় কিছু দেয় না : অনন্ত জলিল

0 423

এতো দিন বাবা হারা ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র তথা এফডিসি। বর্তমানে সিনেমা’র যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে আমা’র জানা নেই এখান থেকে প্রযোজকদের কোনো ইনকাম আছে কিনা। তাহলে কেনো তারা কাড়ি কাড়ি টাকা লগ্নি করবে?

অন্যদিকে অসংখ্য সমস্যার মাঝে নিমজিত আমাদের সিনেমা। এটাকে টেনে তুলতে হবে। যৌথ সিনেমা’র নামে ভারতের সঙ্গে যেসব সিনেমা নির্মিত হচ্ছে এগুলোতে আসলেই কি বাংলাদেশের সিনেমা’র কোনো উন্নতি হচ্ছে?

আমা’রতো মনে হয় ভারত আমাদের থেকে অর্থাৎ বাংলাদেশের থেকে নিতে যানে দিতে নয়।’-এমনই এক মন্তব্য করেছেন আ’লোচিত প্রযোজক, নায়ক ও ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল।

গত বুধবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা ক্ল্যাবে সদ্য প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নবনির্বাচিত নেতাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন অনন্ত জলিল। অনন্ত জলিল বলেন, ‘মুখে অনেকেই বড় বড় কথা বলেন। জানান চলচ্চিত্রের এই সমস্যা, সেই সমস্যা। এটার উন্নতি করতে হবে। কিন্তু কথা অনুযায়ী কাজ করেন ক’জন? বেশ কয়েকজন প্রযোজক নেতা বিভিন্ন সময় আমাকে বলেছেন চলচ্চিত্রকে বাঁ’চাতে হবে। নিজ নিজ স্থান থেকে ভালো ভালো কাজ করতে হবে। কিন্তু যখনই কোনো ভালো কাজে নেমে পড়লাম। ঠিক তখনই আমাকে ছাপার করতে হলো বাজে সব অ’ভিজ্ঞতার।

আপনারা সবাই জানেন দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আমি ‘দিন দ্য ডে’ নামে ইরানের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় একটি সিনেমা নির্মাণ শুরু করেছি। যৌথ প্রযোজনায় কাজ করতে গেলে অনেকগুলো প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়। নিয়ম মানার জন্যই আমা’র এই সিনেমাটির কাজ শুরুর আগে এফডিসিতে ফাইল জমা করি।

এ অবস্থায় যে হয়’রানিটা আমাকে করা হয়েছে। এটা সত্যিই ভোলার নয়। অন্য যৌথ প্রযোজনার সিনেমা’র ক্ষেত্রে হয়তো এতো মিটিং আটাংয়ের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যখনই আমি ইরানের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় ভালো একটি কাজ শুরু করি তখনই সব সমস্যার সৃষ্টি হলো। বার বার মিটিং! বার বার হয়’রানি।

এমনও হয়েছে ইরান থেকে ১৫ জনের একটি দল বাংলাদেশে চলে এসেছে কাজ করতে। কিন্তু তখনও আমা’র ফাইলটির অনুমোদন হয়নি। প্রায় ১৫ দিন ইরানের সেসব টেকনিশিয়ানদের আমি পাঁচ তারকা হোটেলে রেখেও অনুমোদন পাই না। বার বার মিটিং হয় আমা’র সিনেমাটি নিয়ে। কিন্তু অনুমোদন আর হয় না। সে কারণে কাজ না করেই ইরানীদেরকে বাংলাদেশ ত্যগ করতে হয়।’

অনন্ত জলিল আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের নেতারা মনে করেন কলকাতা ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে আম’রা যৌথ প্রযোজনায় কাজ করলে কিনা কি হয়ে যাবে। দেশের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। কিন্তু লাভটা যে ইরান বা অন্যান্য উন্নত দেশেই আছে সেটা তারা জানেন না বা বুঝতে চেষ্টাও করেন না। তারা শুধু জানেন মিটিং করে করে কিভাবে একটি প্রজেক্ট ভেস্তে দেওয়া যায়। ভালো একটি প্রজেক্টটাকে কিভাবে লেন্দি করা যায়। তারা যৌথ প্রযোজনা মানেই বোঝেন ভারত তথা কলকাতাকে। কিন্তু একবারও ভাবেন না যে, ভারত শুধু আমাদের থেকে নেয় কিছু দেয় না।’

প্রযোজক সমিতির নব গঠিত নেতা এবং সংশ্লিষ্ট অনেকের সামনে এমনই আরও অনেক কথায় তুলে ধরেন অনন্ত। সেই সঙ্গে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সবাইকে ভিন্নধ’র্মী সব পরিকল্পনা গ্রহণেরও অনুরোধ জানান তিনি।

নানা জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর সম্প্রতি চলচ্চিত্রের মাদার সংগঠন নামে পরিচিত চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেছেন স্বনামধন্য প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী হয়েছেন শামসুল আলম। তারা আগামী দুই বছর সংগঠনটির ভালো মন্দ দেখার জন্য শপথ গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত কামাল কিবরিয়া লিপু ও মো: শহীদুল আলম। সহকারী সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল ও মো: আলিমুল্লাহ খোকন। কোষাধ্যক্ষ মেহেদী হাসান সিদ্দিকী’ মনির, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মোর্শেদ খান হিমেল এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ইলা জাহান নদী শপথ বাক্য পাঠ করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.