ইরাক ও সিরিয়ায় দায়েশ শেষ হয়ে গেছে: ট্রাম্প; সন্ত্রাসীরা এখনো তৎপর: পেন্টাগন

0 325

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর ঘোষণা করেছিলেন তিনি সিরিয়া থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেবেন। তিনি আরো দাবি করেছিলেন, দায়েশ সন্ত্রাসীদের পতন হওয়ায় সিরিয়ায় মার্কিন সেনা মোতায়েন রাখার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে গেছে এবং এ কারণেই সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। এরপর হোয়াইট হাউজ গত ২২ মার্চ এক বিবৃতিতে সিরিয়ায় দায়েশ সন্ত্রাসীদের সর্বশেষ ঘাঁটির পতন ঘটার কথা জানায়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়েশ পরাজিত হয়েছে বলে দাবি করলেও মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন আজ জানিয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় দায়েশ সন্ত্রাসীরা এখনো তৎপর রয়েছে এবং ওই দেশ দু’টিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পেন্টাগনের ওয়েব সাইটে বলা হয়েছে, গত তিন মাসের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে দায়েশ সদস্যদেরকে সিরিয়ায় স্থানান্তর করা হচ্ছে এবং ইরাকে তাদের অবস্থান স্থিতিশীল রয়েছে।

এদিকে, মার্কিন সেনারা দাবি করেছে, দায়েশের পতন ঘটানোর জন্য ২০১৬ সালের আগস্ট থেকে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের দাবিমতে ইরাকে প্রায় ১৪ হাজার এবং সিরিয়ায় প্রায় ১৮ হাজার দায়েশের উপস্থিতি রয়েছে। এদের মধ্যে তিন হাজারের বেশি বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সন্ত্রাসী রয়েছে যারা দায়েশে যোগ দিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরাক ও সিরিয়ায় দায়েশের উপস্থিতির ব্যাপারে পেন্টাগনের এ স্বীকারোক্তি থেকে বোঝা যায়, দায়েশ পরাজিত হয়েছে ও সিরিয়ায় তাদের সর্বশেষ ঘাঁটির পতন ঘটেছে বলে এর আগে ট্রাম্প যে দাবি করেছিলেন তা ছিল মিথ্যা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বহুবার দাবি করেছিলেন, দায়েশকে নির্মূল করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং ওই দুই দেশের জনগণকে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তিনি মুক্ত করবেন।

বাস্তবতা হচ্ছে, ট্রাম্পের এ দাবি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা ও লোক দেখানো। ২০১৬ সালে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারকালে ট্রাম্প দায়েশ সন্ত্রাসীদের তৈরির ব্যাপারে ওবামা প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পও দায়েশ সন্ত্রাসীদেরকে সহযোগিতা করা অব্যাহত রাখেন। আসলে আমেরিকার সব সরকারই দায়েশ সন্ত্রাসীদেরকে গড়ে তুলেছে ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।

২০১১ সালে সিরিয়ায় সংকট শুরুর পর থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য বিশ্ব ও তাদের আরব মিত্ররা এ অঞ্চলে তাদের অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের আবির্ভাব ঘটায়। তারা অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে এদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইভান ইপোলিতোভ মনে করেন, গত বেশ ক’বছর ধরে আমেরিকা এ অঞ্চলে তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য উগ্র দায়েশ সন্ত্রাসীদেরকে ব্যবহার করে আসছে।

আমেরিকার তৎপরতা লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে দায়েশ সন্ত্রাসীরা ইরাক ও সিরিয়ার বহু শহর দখল করে নিয়েছিল। আমেরিকার অর্থ ও অস্ত্র সহযোগিতা নিয়ে তারা এতদূর অগ্রসর হয়েছিল। এমনকি আমেরিকা দায়েশ বিরোধী আন্তর্জাতিক জোটও গঠন করেছিল যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কেবল দায়েশকে রক্ষা করা। এ অবস্থায় আমেরিকা যখন দায়েশের বিরুদ্ধে কথা বলে তখন অবশ্যই তাদের আন্তরিকতা ও সত্যতা নিয়ে সন্দেহ জাগে। #

পার্সটুডে

Leave A Reply

Your email address will not be published.