‘সময় থাকতে মাথা ঠাণ্ডা করে পদত্যাগ করুন’: প্রধানমন্ত্রীকে ড. কামাল

0 894

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সময় থাকতে মাথা ঠাণ্ডা করে পদত্যাগ করুন। আপনারা যেগুলো করছেন, এসব করে বার বার পার পাওয়া যাবে না।

রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে জমায়েত ও নাগরিক শোক র‌্যালি পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি’ উপলক্ষে এ জমায়েত ও নাগরিক শোক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে কামাল হোসেন বলেন, গত ২৯-৩০ ডিসেম্বর কী কোনো নির্বাচন হয়েছিল? আপনি যে ৩০ তারিখে বললেন, আমাকে তৃতীয়বার নির্বাচিত করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। কে আপনার ধন্যবাদ গ্রহণ করবে? আমি সাক্ষি দেব তৃতীয়বার আপনাকে কেউ নির্বাচিত করেনি। আপনি নাটক করেছেন, আপনিতো নাট্যকার কোনো নেত্রী না। আপনি নিজে মিথ্যার শিকার হয়েছেন। এতে ভয়াবহ পরিণতি হয়।

কুষ্টিয়ায় আবরারের বাড়িতে যাওয়ার সময় বিএনপি নেতাদের বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে কামাল হোসেন বলেন, যারা এই বাধা দিচ্ছে সবাই তাদের তালিকা করে রাখেন। এসব সাংবিধানিক অধিকারে বাধাদানকারীদের কড়া শাস্তি হবে।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারকে যেভাবে হত্যা করা হলো এরা কি মানুষ প্রশ্ন করে ড. কামাল বলেন, এসব ছেলেদের আমরা পশু বানাচ্ছি কেন? কারা এদেরকে পশু বানাচ্ছে? বাংলার এই ছেলেরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। এরা সৎ সাহসী ছেলে। এদেরকে আপনারা পশু বানিয়েছেন। যারা মানুষকে অমানুষ বানাচ্ছেন, আপনাদের কি শাস্তি হবে সেটা চিন্তা করেন। কোনো ছেলে পশু হয়ে মায়ের পেট থেকে জন্ম হয় না। যেসব লোক মানুষকে পশু বানাচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করুন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ১৬ কোটি মানুষের দেশ এখানে কতিপয় লোককে রাষ্ট্রক্ষমতার প্রশ্রয় দিয়ে পশু বানানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে দলের নামে এখন দেশ শাসন করছে, এই দলেতো আমরা সবাই ছিলাম। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম। তাজউদ্দীন, নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে। সেই দলের নামে যে কাজগুলো হচ্ছে সেটাতে বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন, নজরুল ইসলামকে অসম্মান করা হচ্ছে। অসম্মান করা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে।

আবরারকে যারা হত্যা করেছে তারা কার আদর্শের অনুসারী প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে ড. কামাল বলেন, যিনি দেশ শাসন করছেন তার আদর্শের অনুসারী। এই আপনার আদর্শ? এই যদি আপনার আদর্শের হয়ে থাকে তাহলে আর এক মুহূর্তও আপনার সিংহাসনে থাকা উচিত না। এই জনসভায় যারা আছেন সবাই বলছে আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি দেশ শাসন করা থেকে সরে দাঁড়ান। নির্বাচন হোক। দেশকে শাসন করবে দেশের মানুষ। সাধারণ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে তারা ঠিক করবে কে দেশ শাসন করবে।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার বেঁচে থাকা নিয়ে সবাই আশঙ্কা করছেন। তিনি বিরোধী দলের নেতা ও তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অসুস্থ হওয়ার পরে উনাকে মুক্ত করা হবে না, তিনি চিকিৎসা পাবেন না। এটা আমাদের সভ্যতা ও সংবিধান বিরোধী। আমি তার মুক্তির বিষয়ে সবার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করছি।
সভায় নেতাকর্মীরা জাতীয় পতাকা, কালো পতাকা ও নেতাকর্মীরা বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে আবরারের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া ব্যানার ও আবরারের ছবি সম্বলিত প্লে-কার্ড নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে দেন নেতাকর্মীরা।

ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সভায় ঐক্যফ্রন্ট নেতা আসম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ফ্রন্টের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রুত চৌধুরী, নূরুল আমিন বেপারী, তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, বিএনপি নেতা শামা ওবায়েদ বক্তব্যে রাখেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.